বর্ষা সুন্দরী
কবি কল্পনা মজুমদার
রূপসী বর্ষা অঙ্গে তব কত রূপ।
রুপালি বরণ মুক্ত সম অপরূপ।
কখনো ঝরোঝরো ধারায় বহিছো অবিরত।
কখনো মৃদু রিমিঝিমি ঘুঙুর পায় হও পতিত।
গ্রীষ্মের খরতাপে তোমার আসার আশায়,
কৃষকেরা খরা জমি নিয়ে বসেছিল হতাশায়।
তুমি এলে জাদুকাঠি নিয়ে সহসা,
নদ-নদী খাল-বিল শুষ্ক কৃষি জমি পেল ভরসা।
বৃক্ষরাজি সব ধুলাহীন শাখা পল্লব দোলায় সবল সতেজ,
সবুজে সবুজে জুড়ায় চোখ নেই কিছু আর নিস্তেজ।
মানব দেহ-মনে এনে দিলে কোমল পরশ,
বর্ষাস্নাত কৈশোর ফিরে পায় নিজ নিজ বেশ।
হাঁটু সম জমা জলে জলকেলি করে শিশু চঞ্চল চপল পায়,
নৃত্য করে তরুণ-তরুণী,
অঝোর ধারায় গায় মেঘমল্লার রাগিনী।
শিশু যুবা বুড়ো সবাকার মনে ছিলে তুমি সুপ্ত,
হিসাবের খাতায় আছে কিছু তব রূঢ় বাস্তব গুপ্ত।
অতি বর্ষণে জলমগ্ন গরিবের ভগ্ন গৃহ,
জল ভাসি হয়ে কলার ভেলায় কাটায় প্রহর কেহ কেহ।
কখনো উগ্র বর্ষার অঝোর ধারার প্লাবন,
কৃষকের কৃষি আর ফসল ধুয়ে মুছে দেয় করি দৃঢ় পণ।
এ কোন রূপে রূপসী তুমি যে বর্ষা সুন্দরী!
ভাসাও ডুবাও খরা করো দূর একই অঙ্গে ভয়ংকরী।